1. mail.bizindex@gmail.com : newsroom :
  2. info@www.bhorerawaj.com : দৈনিক ভোরের আওয়াজ :
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
“বাঁশখালীতে ৪ হাজার ইয়াবাসহ টেকনাফের মাদক কারবারি আটক: ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ” হোমনায় মহান মে দিবস উপলক্ষে  বিএনপির বর্ণাঢ্য র‍্যালি  ড. মোহাম্মদ ইউনূস এর শুভ আগমনে বোয়ালখালীবাসীর পক্ষ থেকে হাজী মোহাম্মদ আলম ববির শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা পুলিশ পরিচয়ে ঘরে প্রবেশ করে পরিবারের ৮ জনকে বেঁধে ছয়টি দোকান ঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মালামাল লুট করেছে দুর্বৃত্তরা রোদেলা দুপুরে পারকি সৈকতের বালুকাবেলায় কলম যোদ্ধারা,স্মৃতিময় এক মে দিবস! ড. মোহাম্মদ ইউনূসের দক্ষিণ চট্টগ্রাম সফর সিএমপি কমিশনার ও পাঁচ ওসি পেলেন আইজিপি ব্যাজ সাহস, দক্ষতা ও মানবিক পুলিশিংয়ের স্বীকৃতি আইজি পি ব্যাজ পেলেন ওসি আফতাব উদ্দিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের সূচনালগ্নের সাহসী পুরুষ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন! দৃষ্টি আকর্ষণ

পুলিশ  আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অঙ্গিকারবদ্ধ——-ডিআইজি  হাবিব 

মো. কামাল উদ্দিন
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

১৫ সেপ্টেম্বর, আমি চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ সাহেবের সঙ্গে একাধিক প্রশ্ন নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলাম। তিনি ৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম রেঞ্জে ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি ১৫তম বিসিএস-এর কর্মকর্তা হলেও, তাঁর অনেক জুনিয়র ইতোমধ্যে ডিআইজি হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। একজন সৎ, চৌকস ও মেধাবী পুলিশ অফিসার হিসেবে তাঁকে যথাসময়ে পদোন্নতি না দেওয়ার পেছনে কোনো অদৃশ্য কারণ কাজ করেছে বলে মনে হয়। এর আগে আমি বহু ডি আই জির সাক্ষাৎকার নিয়েছি, অনেকে আইজিপি হয়েছেন, তবে আহসান হাবিব পলাশের মতো মানবিক ও সত্যবাদী একজন ডিআইজি খুব কমই দেখেছি। তাঁর আচার-আচরণ অত্যন্ত অমায়িক এবং সৎ। প্রথম সাক্ষাতেই তিনি আমাকে খুব আন্তরিকভাবে আপন করে নেন। আমি তাঁর সম্পর্কে কিছু লেখা লিখেছিলাম, যা তিনি পড়েছেন। সাক্ষাতের সময় আমি তাঁকে আমার লেখা “নারী কথা” এবং “কথার কথা” বই দুটি উপহার হিসেবে দিলাম, সাথে দিলাম জাতীয় দৈনিক ভোরের আওয়াজ এবং ইংরেজি পত্রিকা The Daily Banner। বই হাতে নিয়ে তিনি পৃষ্ঠাগুলো উল্টাতে উল্টাতে হেসে বললেন, “আপনার এত লেখালেখির সময় কোথায়? একদিকে সাংবাদিকতা, অন্যদিকে টেলিভিশন উপস্থাপনা, আবার সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব!” পলাশ সাহেব অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তি। তিনি হেসে বললেন, “আপনি একবার ‘চোরের মায়ের বড় গলা’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলেন। ২০০১ সালের পর থেকে আর লেখাটি খুঁজে পাচ্ছি না। এখন কি চোরের মায়ের গলা ছোট হয়ে গেছে নাকি?” কথাটি একটু রসিকতার ছলে বললেও, আমি জবাবে বললাম, “আমি এখনো লিখে যাচ্ছি, লেখা বন্ধ করিনি।” আমার বইয়ের সংখ্যা দেখে তিনি অবাক হলেন। আমি জানালাম, প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২৮টি, এবং আরও চারটি পাণ্ডুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। তিনি আমার লেখালেখির জন্য আমাকে উৎসাহিত করলেন। তাঁর সাদাসিধে ভাষা এবং আন্তরিক ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করে। আমার সাথে ছোট ভাই তুল্য আকতারও উপস্থিত ছিল, এবং তাঁর এই ব্যস্ততার মাঝেও আমাকে সময় দেওয়াটা আমার কাছে স্মরণীয় এক অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। আমি তাঁকে ছোট্ট করে জিজ্ঞেস করলাম, “পুলিশের গৌরব রক্ষা এবং উন্নয়নে কী করণীয়?” তিনি বললেন, “পুলিশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে। তবে আইনশৃঙ্খলার উন্নতির জন্য সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন।” সরকারের পতনের পর মামলা দায়েরের ব্যাপারে তিনি বলেন, “মামলা করার সবার আইনি অধিকার আছে। তবে দেখতে হবে, মামলাটি ঘটনার শিকার হয়ে করা হচ্ছে নাকি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। পুলিশের দায়িত্ব হলো, মামলাগুলোর সত্যতা যাচাই করা। মিথ্যা মামলা কারও জন্য কাম্য নয় এবং নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “মামলা এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এমনকি মামলা করে বাদী আসামির কাছে অর্থ দাবি করার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। একটি মামলায় যা আসামি হওয়ার কথা, সেখানে অনেক মানুষকে আসামি করা হচ্ছে। এতে মামলার মেরিট যেমন নষ্ট হয়, তেমনি তদন্তকারী কর্মকর্তাদেরও হিমশিম খেতে হয়। অহেতুকভাবে মানুষকে হয়রানি করা উচিত নয়। দলমত নির্বিশেষে প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হবে, আর মামলা বাণিজ্য ঠেকাতে আমি বিশেষভাবে সতর্ক আছি।” ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ আমার এক প্রশ্নের উত্তরে বললেন, “মামলা হওয়ার সাথে সাথেই আসামি গ্রেফতার করা উচিত নয়। মামলা দায়ের করার অধিকার যেমন প্রতিটি মানুষের রয়েছে, তেমনি যিনি আসামি হয়েছেন, তাঁরও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায্য বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। আমি কঠোর ভাবে নিরুৎসাহিত করছি, যেন তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা না হয়। তবে কিছু কিছু বিশেষ মামলা আছে, যেখানে আসামিকে তাৎক্ষণিক ভাবে গ্রেফতার না করলে সে পালিয়ে যেতে পারে। তাই মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মামলা গুলোর ক্ষেত্রে তদন্ত শেষে আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে, পুলিশ তা পালন করবে। আবারও বলছি, যেন কেউ অহেতুকভাবে হয়রানির শিকার না হয়।”তিনি আরও বলেন, “কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হানাহানি বরদাশত করা হবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। কোনো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর বাড়িঘর, অফিস বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর বা লুটপাট করা যাবে না। করলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। জনগণের নিরাপত্তার জন্য যেকোনো মুহূর্তে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগের পুলিশ কী করেছে, তা আমাদের দেখার বিষয় নয়। তারা তাদের আচরণের কারণে বিতাড়িত হয়েছে। এখন পুলিশকে অবশ্যই আগের পুলিশের আচরণের বিপরীত কাজ করতে হবে।”

আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভালো সুযোগ-সুবিধা পাননি, তাঁদের মূল্যায়নের চেষ্টা করছি। পুলিশের পদোন্নতি এবং বৈষম্য দূর করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে আগে যারা ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে, তারা আপাতত এই পদে আসতে পারবে না। এখন থেকে পুলিশের দায়িত্ব পালনকারীদের কোনো ধরনের অন্যায় বা অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। কোনো পুলিশ সদস্য অপরাধ করলে, তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিগত সময়ের কোনো পুলিশের বিরুদ্ধে  অভিযোগ পেলে তা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি চট্টগ্রামের ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে এসেছি, আমার ক্ষমতার পরিসরে সবাইকে সমানভাবে পুলিশি সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। আমি কোনো রাজনৈতিক বিতর্কে জড়াতে চাই না।”

তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে, লুট হওয়া অস্ত্র ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সমাজের মাদক নিয়ন্ত্রণে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সবার সহায়তা চাই। মাজার ও মন্দির ভাঙচুরের বিষয়ে আমি জিজ্ঞাসা করলে, তিনি উত্তরে বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সজাগ আছি। এই ধরনের ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি হতে দেব না। পুলিশ তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং কোনো অসামঞ্জস্যপূর্ণ রাজনৈতিক বা ধর্মীয় আচরণও বরদাশত করা হবে না। মাজার ও মন্দির রক্ষায় পুলিশ বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। আগামী মাসে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম উৎসব দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যেন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না হয়, তার জন্য আমাদের সব ধরনের পুলিশি প্রস্তুতি থাকবে।'”

ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ আমার একাধিক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “আমরা পুলিশের গৌরব রক্ষায় সবসময় কাজ করে যাবো। সরকার আসবে, সরকার যাবে, আমি ডিআইজি হিসেবে আজ এখানে আছি, কাল চলে যাবো। কিন্তু দেশ এবং দেশের জনগণ একই অবস্থানে থাকবে। তেমনি পুলিশও তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করে যাবে। পুলিশ ক্ষমতার নয়, পুলিশ হলো জনতার, এবং সেই জনগণের আইনের সেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিগত সময়ে আমরা দেখেছি, অনেক এমপি-মন্ত্রী জনগণের সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা পুলিশকে নানা উপায়ে ব্যবহার করে বিপথগামী করেছে। তবে এখন জবাব দিহিতার সময় এসেছে। আমরা যতক্ষণ পুলিশের পোশাক পরিধান করবো, ততক্ষণ রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবো। আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আমাদের দায়িত্ব হলো জনগণের আইনের অধিকার নিশ্চিত করা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করা।”

তিনি আরও বলেন, “আপনাদের মতো লেখক ও সাংবাদিকদের ভূমিকা আমাদের পুলিশের চেয়েও বেশি। আপনারা সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমাদের পুলিশিং সেবা জনগণের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। আপনারা নির্ভীকভাবে সত্য প্রকাশ করেন, যা আমাদের কাজকে আরও স্বচ্ছ করে তোলে। আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও সমর্থন আশা করি, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করা এবং জনগণের সেবা আরও কার্যকর করা যায়।” ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ একজন সৎ, দক্ষ এবং মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর কথা ও কাজের মধ্যে যে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা রয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তিনি পুলিশের গৌরব রক্ষায় এবং জনগণের সেবায় যে অঙ্গীকার করেছেন, তা নিঃসন্দেহে আমাদের পুলিশ বিভাগকে একটি শক্তিশালী, স্বচ্ছ ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। তাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রাম রেঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে বলে আশা করা যায়। পরিশেষে তিনি বলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অঙ্গীকার বদ্ধ।

লেখকঃ সাংবাদিক গবেষক টেলিভিশন উপস্থাপক।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট