সময়ের সাধারণ বালু ব্যবসায়ী বালু কামাল বর্তমানে শত কোটি টাকার মালিক। তার এই উত্থান ও সমৃদ্ধির পেছনে রয়েছে চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর আশীর্বাদ ও সহায়তা। অভিযোগ রয়েছে, রেজাউল করিমের পৃষ্ঠপোষকতায় বালু ব্যবসায় অগাধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বালু কামাল। চলাফেরা করেন দামি গাড়িতে, রয়েছে কয়েকটি বহুতল ভবন।
২০১৬ সালে, যখন বালু মূল বালুর ব্যবসা হারিয়ে কামাল প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলেন, সেই সময় নুর সিন্ডিকেটের বালুর ব্যবসায় অংশীদারিত্বের মাধ্যমে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১নং ব্লকের নোয়াপাড়া মৌজায় হালদা নদীর মোহনার পূর্বভাগে বালুর মহাল ইজারা নিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু হয়। সেই সময়ে, কামালের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল, দুই বউয়ের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। নুর সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষকতায় বিনিয়োগ ছাড়াই (চার লক্ষ টাকার ভুয়া চেক জমা দিয়ে) রেজাউল করিম অংশীদার হন।সেই সুবাদে রেজাউল করিমের সাথে কামালের লেনদেন শুরু হয়।
নুর সিন্ডিকেটের অন্যান্য অংশীদারদের মতে, বালুর ব্যবসায় যোগ দেওয়ার পর রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে কামালের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বালু চুরি থেকে শুরু করে বড় ধরনের চুরির মাধ্যমে রেজাউল করিম এবং কামাল বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। রেজাউল করিম হঠাৎ শেখ হাসিনার আশীর্বাদে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আসীন হওয়ার পর থেকে কামালের ভাগ্যের দরজা খুলে যায়। কামাল তার দাপটে এলাকা দাপিয়ে বেড়াতেন, যে কারণে সাধারণ মানুষেরা কামালের পাশে যাওয়ার সাহস হতো না।
কামালের নামে প্রতিষ্ঠিত 'কামাল এন্টারপ্রাইজ' সিটি করপোরেশনে টেন্ডার ছাড়াই শত শত কোটি টাকার কাজ পেয়ে যায়। বিশেষ করে চান্দগাঁও পুরাতন থানার সামনে নির্মিত সিটি করপোরেশনের স্পোর্টস টাওয়ারের কাজের ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। কামালের সকল টেন্ডার বিহীন কাজের ফাইল বিদ্যুৎগতিতে চলতো, সিটি কপোরেশন
অনেক সময় কাজ বাকি থাকলেও আগাম বিল পরিশোধ করা হতো। কারণ হিসেবে জানা যায়, কামালের ব্যবসার অঘোষিত অংশীদার ছিলেন রেজাউল করিমের স্ত্রী, যার মাধ্যমে টেন্ডার বিহীন কাজের লেনদেন সম্পন্ন হতো।
নুর সিন্ডিকেটের মতে, মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং কামালের মধ্যে অর্থ ভাগাভাগির চুক্তি ছিল। রেজাউল করিমের কাছে নুর সিন্ডিকেট তাদের প্রায় ১০ কোটি টাকার পাওনা রয়েছে এবং নুর সিন্ডিকেটের টাকায় কেনা বর্তমান কামালের হেফাজতে রক্ষিত বা কর্ণফুলী নদীতে পরিত্যক্ত চারটি
ড্রেজার উদ্ধার করতে প্রশাসনের আইনানুগ হস্তক্ষেপ কামনা করেছে নুর সিন্ডিকেটের মালিক নুর মোহাম্মদ ।
প্রশ্ন উঠছে:বালু কামালের হঠাৎ উত্থান এবং রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে তার সম্পর্কের প্রকৃতি নিয়ে। দুদকের মাধ্যমে কামালের সম্পদের উৎস ও রেজাউল করিমের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব তদন্ত করলে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং এর কর্মকর্তাদের সাথে যুক্ত দুর্নীতির আরও অনেক অজানা তথ্য উদঘাটিত হতে পারে। এখন বালু কামাল বিএনপির নেতা সাজার চেষ্টা করছে এবং ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে।
সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশনের উচিত এই সমস্ত অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে জনসমক্ষে প্রকৃত সত্য তুলে ধরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com