নুর মোহাম্মদ ওয়ালি উর রহমান রতন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায় টাকা ছাড়া মিলছে না ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ। এতে এ সেবা খাতের গ্রহীতারা হয়রানির শিকার হলেও দেখার কেউ নেই।
নীতিমালা মতে, এক থেকে ৪৫ দিন বয়সী শিশুর জন্ম নিবন্ধন কোন ফি নেওয়া হয় না। তবে ডিজিটাল নতুন জন্ম নিবন্ধন ৫০ টাকা, নাম ও বয়স সংশোধনে ১ শত টাকা নেওয়া হয়। শিশুদের জন্য টিকা কাড ও বড়দের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা সার্টিফিকেটের কপি দরকার।
তবে নীতিমালা মানেন না এ পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন কর্মকর্তারা। তারা তৈরি করা নীতিতে জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়া অব্যহত রাখায় নবজাতকের অভিভাবকরা আগ্রহ হারিয়েছেন।
তাই দেড় লক্ষাধিক মানুষের এ শহরে শতকরা ২ ভাগ শিশু নিবন্ধনের আওতায় আসেনি। ডিজিটাল নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদনের পর করলে সেবা গ্রহীতাকে সনদ প্রাপ্তির সময় দেওয়া হয়। পরে জানানো হয় ফাইলটি হারিয়েছে। নতুন আবেদন করতে হবে। এভাবে হয়রানির পর দিন,মাস, বছর ও যুগ পেরিয়ে গেলেও সহজেই মিলছে না ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ নামক ‘সোনার হরিণ’।
মোছা: বাবলী নামে দশম শ্রেণির এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ২০২১ সালে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করি। এটি ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর দেওয়া হবে টোকেনে উল্লেখ করা হয়। তবে আজও পাইনি। এখন তারা বলছে, ডাটা এন্ট্রির সময় তথ্য ভুলের কারণে দেরি হবে।
উম্মে হাবিবা নামে আর এক শিক্ষার্থী জানান, এক বছর আগে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন পেতে অনলাইনে আবেদন করি। এক বছর ধরে ঘোরাঘুরির পর বলছে, আবেদনে ভুল ছিল।
আশরাফুল হক নামে শহরের ১০ নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা জানান, বয়স পরিবর্তনের জন্য সকল কাগজপত্র জমা দেই। ওই অফিসের কর্মরতরা তিন মাস পর জানায়, এখানে হবে না। জেলা অফিসে যান। যেতে না পারলে দুই হাজার দিলেই ঘরে বসে পাবেন ডিজিটাল বয়স সংশোধনী জন্ম নিবন্ধন। একই অবস্থা বিরাজ করছে ডিজিটাল মৃত্যু সনদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও।
লাবনি আক্তার নামে এক গৃহবধু জানান, আমার স্বামী চলতি বছরের ৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন। সরকারি চাকুরীজীবী হওয়ায় মৃত্যু সনদটি খুবই দরকার। এই সনদের আবেদন করেও ১০ দিন পরেও মিলছে না। তারা বলছে, আবেদনে ভুল। অথচ আবেদনটি তারাই লিখেছে। এখানে টাকা দিলে সবই সহজ। না দিলেই নিয়মের বেড়াজালে আটকে দেওয়া হয় ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ।
সংশোধনকারীদের বয়স প্রমাণে এমবিবিএস চিকিৎসকের প্রত্যায়ন, হোল্ডিংয়ের কাগজ, কাউন্সিলরের প্রত্যায়ন, মেয়র বা নিবন্ধকের প্রত্যায়ন, থানার জিডি কপিসহ নানান কাগজ পত্র চাওয়া হয়। এতে সেবা গ্রহীতারা জিম্মি দশায় অতিষ্ট হলেও দেখার কেউ নেই।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই পৌরসভার এক কর্মচারি বলেন, ওই শাখার ইনচার্জ নিয়োগ আছেন বাজার শাখায়। অথচ তিনি ইপিআই, স্যানিটারি ও তথ্য শাখা দেখাশোনা করেন। আবার সংবাদপত্রের সঙ্গে জড়িত। এতে প্রতিষ্ঠানটির গোপন তথ্য ফাঁস ও চুরির আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
জন্ম নিবন্ধন শাখার ইনচার্জ মো: আকমল হোসেন রাজু বলেন, এ শাখায় এমন ঘটনা কখনই ঘটে না।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মো: শাহিন হোসেন বলেন, কোন সেবা গ্রহীতাকে হয়রানি বা আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ শাহজালাল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন,যুগ্ম-সম্পাদক :মো. কামাল উদ্দিন,
নির্বাহী সম্পাদক : রাবেয়া সিরাজী
বার্তা ও বাণিজ্য বিভাগ : মোতালেব ম্যানশন, ২ আর কে মিশন রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১২০৩।
মোবাইল : 01796-777753,01711-057321
ই-মেইল : bhorerawajbd@gmail.com